ওঃ তোর কবিতা? তার মানে তো চলন্তিকা ঘেঁটে কিছু সংস্কৃত শব্দচয়ন।
নয়তো তোমার আরাধ্যদেব, রবীন্দ্রনাথ--
তেনার থেকে ধার করে ভাব দু চার লাইন টুকলি করা।
ক্যান রে বাবা?
শব্দ হবে দৈনন্দিন, ভীষণ রকম কলোকিয়াল,
দূর করে দে ওসব এবার, জীর্ণরীতি পুরাতনী।
রোজ যা করিস, ছুঁয়ে দেখিস, ভাবিস, পড়িস, সেসব কিছু আমদানী কর,
নয়তো তোর এই ন্যাকা ন্যাকা কাব্যকথা পড়বেনা কেউ।
জট পড়া এই সমাজটাকে প্রতীক করে কবিতাতেও জট লাগাবি।
গান তো শুনিস পূর্বা দামের?
গুড়বাদামের চেয়েও সে গান মিষ্টি মধু,
কিন্তু এমন সৃষ্টিছাড়া, ভুল উপমা পাগলপারা
লিখতে তো তোর লজ্জা করে। তাইতে তো তুই শয্যা 'পরে
চাদর মুড়ে লুকিয়ে থাকিস। ঢঙমাখা তোর কবিতাতে
বুকের দাঁড়ে দোল খেয়ে যায় গোপন পাখি,
সেই সোয়ালো, অবাক অবাক প্রিন্সও আসে রাখাল সেজে,
বই-এর পাতায় পা গুটিয়ে সেও বসে নেই।
স্বর্গে তো তার জায়গা পাকা, সেসব ছেড়ে পাগলা ছোঁড়া
রাতারাতি বাজিয়ে বাঁশি গাইছে কোরাস--
তার সাথে তুই সুর মিলিয়ে সারারাতের ভাঙাচোরায়, ভেসে যাওয়ায়,
দূরের মাদল, বাদল হাওয়ায় মলাট লাগাস ডায়েরিটাতে--
খেয়াল করে দু চোখ মেলে দ্যাখ তাকিয়ে,
এই যে আমি একটানেতে বলে গেলুম 'পাগলা ছোঁড়া'
তুই হলে তা লিখতিস কি?
তুই লিখতিস পাগলা ঝোরা, ঝর্ণা নদী কাঁপন লাগায় দখিন বায়ে--
বাদ দে ওসব ন্যাকাপনা, সহজ হবি, ওরে মন সহজ হবি--
তবেই তোমার কাব্যকলা এবং তোমার পাঠকসকল হাচের কুকুর,
কলকলাবে, লেজ নাড়াবে, লটপটে কান ঘুরবে দেখিস পায়ে পায়ে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment